বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

আ.লীগ সরকারের আমলে দখল নেওয়া জমি উদ্ধার করল গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ

Reporter Name / ৯৭ Time View
Update : বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫

কে এম শাহীন রেজা,

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রবিউল ইসলামের দখলে থাকা জমির সীমানা প্রাচীরের ফটক ভেঙে ফেলছে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। কুষ্টিয়ায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের জায়গা দখল করে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বড় ফটক নির্মাণ করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম। একই সঙ্গে গৃহায়ণের বিভিন্ন প্লট দখল করে সেখানে আইটি পার্ক, স্কুল ভবন, জেলা পরিষদের মিলনায়তন নির্মাণ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের উপস্থিতিতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় দখল করা জায়গায় তৈরি করা বেশ কিছু স্থাপনা। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সবগুলো জায়গা দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ। এ সময় অন্তত ৫০ জন প্লটের প্রকৃত মালিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মনে আনন্দের জোয়ার দেখা গেছে। তাঁরা বলছেন, আট বছর ধরে তাঁরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন নিজেদের জায়গা ফিরে পেতে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাঁদের জায়গা দখল করে নেওয়া হয়েছিল। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সাড়ে ১৯ একর জায়গা রয়েছে। এসব জায়গা ২০১৮ সালের আগে লটারি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। আড়াই কাঠা, তিন কাঠা ও পাঁচ কাঠার প্লট রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২১২টি প্লট রয়েছে। তবে ২০১৮ সালের দিকে জেলা প্রশাসন এসব জমি অধিগ্রহণের নামে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়। এদিকে প্লট বরাদ্দ পেয়ে অনেকে তাঁদের জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। প্লটমালিকেরা তাঁদের জমি আর বুঝে পাননি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে বিশাল আকারের শাহি মসজিদ, এক হাজার আসনের অত্যাধুনিক জেলা পরিষদের মিলনায়তন, আইটি পার্ক। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রবিউল ইসলামও দুই বিঘা জমি দখল করে নেন। রবিউল ওই জমিতে সীমানাপ্রাচীর দিয়ে বড় ফটক নির্মাণ করেন। শাহি মসজিদের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। জেলা পরিষদের মিলনায়তনের ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আইটি পার্কের ১৫ থেকে ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। প্লট মালিকেরা বলেন, সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়েও প্লট বুঝে পাচ্ছিলেন না। তাঁরা আওয়ামী লীগ আমলে রায় পেলেও প্রভাবশালী নেতারা জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছিলেন উন্নয়ন করার নামে। উল্টো মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন। ২০১৮ সালের দিকে ৬ জন প্লট মালিক তাঁদের জমি ফেরত পেতে উচ্চ আদালতে রিট করেন। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর তাঁদের পক্ষে রায় পান এবং মঙ্গলবার এই উচ্ছেদ অভিযান চলে। ভুক্তভোগী সাইফুল আলী জানান, তিনি বি ব্লকে ৯ নম্বর প্লট পেয়েছিলেন। পাঁচ কাঠা জমি বরাদ্দ পেয়ে রেজিস্ট্রি করেছিলেন। কিন্তু গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বুঝিয়ে দিতে পারেনি। ওই সময় জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন খাস দেখিয়ে এসব জমি অধিগ্রহণ করেন। কিন্তু তিনিসহ ৬ জন প্লটমালিক উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর তাঁরা রায় পান। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের এসডিও মাহসুদুর রহমান বলেন, আমাদের প্রায় ২০ একর জায়গা নিয়ে সমস্যা আছে। আমরা সেগুলো দখলমুক্ত করছি। নতুন করে নকশা করা হবে। যারা রেজিস্ট্রি করেছে তাঁদের জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। মসজিদ নকশাতে রাখা হবে। এ ছাড়া জেলা পরিষদের মিলনায়তনটি খেলার মাঠের জায়গায় করা হয়েছে। সেটিও রাখার প্রস্তাব করা হচ্ছে। তা ছাড়া, বাকি সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page