বার্তা সম্পাদকঃ মোঃ আব্দুর রহমান ,
এবার গরু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। বিশালদেহী এসব গরুর বর্তমান বাজারমূল্য একেকটি অন্তত দুই থেকে চার লাখের বেশি।
শোনা যায়, উপজেলার জয়রামপুর এলাকার চরদিয়াড় ফসলের মাঠে একটি গরুর খামারে সন্দেহজনক বেশকিছু গরু রাখা হয়েছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।
সোমবার দুপুরে জয়রামপুর এলাকায় গেলে খামার থেকে মাত্র কয়েকশো গজ দূরের বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম ওই খামারের গরুর সংখ্যা বা কবে ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে এধরনের কোনো বিষয়ে মূখ খুলতে চাননি। এমন মুখ না খোলার আতঙ্ক ওই এলাকার প্রায় সব বাসিন্দাদের মধ্যেই।
পরে খামারে পৌঁছালে প্রবেশ পথের আগেই মূল সড়কে দাড়িয়ে থাকা দেশীয় অস্ত্র হাতের প্রহরীরা থামিয়ে দেয় প্রতিবেদকদের। খামার পরিদর্শনে নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়, দ্রুত লাগিয়ে দেয়া হয় গেইট। কালক্ষেপণ না করে ফিরে যেতে বলা হয় প্রতিবেদকদের।
জানা যায়, দৌলতপুরের কল্যাণপুর এলাকার বাবু গত বছর দুয়েক ধরে এই খামার পরিচালনা করে আসলেও এখানে ৪-৫ টি করে গরু থেকেছে, কখনো কখনো সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮-১০ -এ। এসব গরুর আকারও বড় নয়। সম্প্রতি দেশে সরকার পরিবর্তনের পর খামারটিতে একে একে গরু আসতে শুরু করে যার সবগুলোই মোটাতাজা-পরিপক্ক এবং মোটা দামের গরু। সবশেষ, গতকাল ২২ সেপ্টেম্বর খামারে গরু ঢোকে ২০ থেকে ২৫ টি। প্রতিটিরই বাজারমূল্য ২ লাখের বেশি। এরপরই গুঞ্জন হয় আরও জোরালো। সরেজমিনে খামারে দেখা যায় গরু রয়েছে অন্তত ৪৫ টি।
খামারের এক কর্মী জানান, এখানে সরকার পরিবর্তনের আগে কোনো গরু ছিলো কি-না জানা নাই। গতকাল বেশকিছু গরু আনা হয়, এর সাম্প্রতিক আগেও কিছু আনা হয়েছে। এসময় মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছিলেন তিনি। এদিকে ওদিকে তাকিয়ে দেখছিলেন সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতে তাকে কেউ দেখছে কি-না।
নিরাপত্তার স্বার্থে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়রামপুর এলাকার এক ব্যবসায়ী ও কৃষক জানান, এলাকাবাসীর কাছে বিষয়গুলো পরিষ্কার। এখানে বিভিন্ন লুট ও চুরির গরু এনে রাখা হয়েছে। গরুর বৈধতার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি।
স্থানীয়দের মধ্যে আরও গুঞ্জন রয়েছে, কোনো আওয়ামীলীগ নেতার গোপন ব্যবসার খামারের গরু সরিয়েও এখানে রাখা হতে পারে।
অবৈধ ভাবে রাখা গরুর অভিযোগের প্রশ্নের প্রতিত্তোরে খামারি বাবু বলেন, নোয়াখালী সদরের একটি খামার থেকে তিনি গরু কিনে এনেছেন। তবে বিক্রেতার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। যদিও পরে একটি রশিদের স্ক্যান কপি সরবারাহ করেন তিনি।
ক্রয় রশিদে থাকা দুটি ফোন নম্বরের একটি পাবনার মাহমুদুলের। তিনি বলেন, নোয়াখালীর জেকে জারিয়াত অ্যাগ্রো ফিশারিজ এন্ড ডেইরি ফার্মে তিনি একসময় চাকরি করলেও এখন করেন না। অপর নম্বরটি নোয়াখালীর রাসেলের, তিনি দাবি করেন তার খামার থেকে ১৮টি ষাঁড় গেল ২০ তারিখে এ.আর.বি ক্যাটেল ফার্মের জন্য ক্রয় করেছেন বিপ্লব হোসেন। তবে, তাদের সুত্র অনুসারে ২০ তারিখে কিনে নোয়াখালী থেকে রওয়ানা হওয়া গরু কুষ্টিয়ায় পৌঁছেছে ২২ তারিখ বিকালে।
এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, আলোচ্য নামের কোনো খামার বা খামারী সরকারি তালিকায় নেই।
নোয়াখালীর সদর উপজেলার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের খোঁজ নিতে গেলে, ক্রয় রশিদে সরবারাহ করা খামারের বাস্তবিক খোঁজ মিলেনি।
দৌলতপুর থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
আইনী তদন্তের পরই গরুর প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
thedailyajkerhaowa.com
একটি অনলাইন নিউজ সংরক্ষন প্রতিষ্ঠান
সম্পাদক: সুজন মাহমুদ , প্রকাশকঃ নুরুন্নাহার হিরা , বার্তা সম্পাদকঃ শুভ শেখ, মোবাঃ01721-111321
Copyright © 2025 Ajker Haowa. All rights reserved.You cannot copy content of this page