দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ৮৪৬ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ৬৩৫ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৩ হাজার ২৬ জনে।
শনিবার (৬ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন।
তিনি ৫০টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২হাজার ৯০৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৪৮৬টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৮৪ হাজার ৮৫১টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৬৩৫ জনের দেহে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৩ হাজার ২৬ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৫ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ৮৪৬ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫২১ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১২ হাজার ৮০৪ জন।
নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ২৮ জন পুরুষ, নারী সাতজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে আটজন, সিলেট বিভাগে দুজন, রাজশাহী বিভাগে তিনজন এবং বরিশাল বিভাগে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ২৫ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, নয়জন বাড়িতে এবং হাসপাতালে আনার পর একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বয়সের দিক থেকে ১১ থেকে ২০ বছরের দুজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব দুজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১০ জন, ষাটোর্ধ্ব পাঁচজন, সত্তরোর্ধ্ব নয়জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের একজন মারা গেছেন।
গত শুক্রবারের (৫ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ জন মারা গেছেন। ১৪ হাজার ৮৮টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৮২৮ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ও মৃত্যু-উভয়ই বেড়েছে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর রেকর্ড আছে। এ তথ্য জানানো হয় ৩১ মে’র বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে দুই হাজার ৯১১ জনের, যা গত ২ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়।
শনিবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ২১ দশমিক ১০ শতাংশ। লিঙ্গভেদে শনাক্তের হিসাবে ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৯ শতাংশ নারী। রোগী শনাক্ত বিবেচনায় এ পর্যন্ত সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং নারী ২২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩১৪ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন সাত হাজার ১৬২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৫ জন।
দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০৬টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৭৮৯ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৯৯ হাজার ২২২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮১১ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৪২ হাজার ৯২৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ২৯৮ জনকে।
দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান ডা. নাসিমা।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্ব। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৮ লাখ ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৯৮ হাজারেরও বেশি। তবে ৩৩ লাখ ৬১ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।
thedailyajkerhaowa.com
একটি অনলাইন নিউজ সংরক্ষন প্রতিষ্ঠান
সম্পাদক: সুজন মাহমুদ , প্রকাশকঃ নুরুন্নাহার হিরা , বার্তা সম্পাদকঃ শুভ শেখ, মোবাঃ01721-111321
Copyright © 2025 Ajker Haowa. All rights reserved.You cannot copy content of this page