ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লীফ ফ্যাক্টরির সামনে ২২ দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে মৌসুমী শ্রমিক ও ১১ জন বাইরে থাকা শ্রমিকগণ। আজ বুধবার সকাল ৮ঘটিকা থেকে শুরু হয় কর্মসূচি চৌড়হাস মোড় সংলগ্ন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লীফ ফ্যাক্টরির সামনে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তারা। এ সময় প্রায় আধা কিলোমিটার জুড়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় তাদের। এসময় শ্রমিকদের হাতে তাদের ২২ দফা দাবিসমুহ লেখা ফেস্টুন দেখা যায়, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে তারা ফ্যাক্টরির প্রধান ফটক ও সীমানা প্রাচীর প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকের সামনে এসে- শ্রম দিলাম, টাকা কই। আমার টাকা ব্যাটের কাছে, তাও কী তোমার লজ্জা আছে। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, শ্ৰম দিছি টাকা কই। তুমি কে, আমি কে শ্রমিক,শ্রমিক, আমার দাবি তোমার দাবি মানতে হবে মানতে হবে। এধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে অবস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়,বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে কোম্পানির পাওনা মুনাফা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, এক নিয়োগপত্র, আইন বহির্ভূত বাইরে রাখা শ্রমিকদের চাকুরীতে পুনর্বহানসহ ২২দফা দাবি পুরোন করতে হবে। তারা উল্লেখ করেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কুষ্টিয়া লীফ ফ্যাক্টরির মৌসুমী শ্রমিকগণের ২২ দফা দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পর গত ১৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে শ্রমিকদের দাবি দাওয়াসমূহ ৩ কর্মদিবসের (২২এপ্রিল) মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিলুফা ইয়াসমিন উপসচিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে প্লান্ট ম্যানেজার, জি,এল,টি প্লান্ট বরাবর নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু সচিবালয় প্রদত্ত সেই ৩ দিনের সময় সীমার পার হলেও বিএটিবির কর্মকর্তারা সচিবলায়ের নির্দেশনার কোন কর্নপাত না করে আজ ২৪ এপ্রিল তামাকের নতুন মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে। সচিবালয় থেকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে তিন কার্যদিবসে মৌসুম শুরুর পূর্বে ২২ এপ্রিলের মধ্যে ১২৮ জন মৌসুমী শ্রমিক ও ২০২৩ সালে চাকরিচ্যুত ৫ জন মৌসুমী শ্রমিক ও ২০২৪ সালে চাকুরি থেকে বাদ দেওয়া ১১ জন মৌসুমী শ্রমিকসহ মোট ১৪৪ জন মৌসুমী শ্রমিকদের দাবি মেনে তাদের চাকরিতে পুনর বহাল করতে হবে।
তারা বলেন প্রতি বছর আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এভাবে আমাদের সাথে বছরের পর বছর প্রতারণা করে যাচ্ছে কোম্পানির কর্মকর্তারা। আমরা খেয়ে আছি নাকি না খেয়ে আছি, কিভাবে বেঁচে আছি সেই খোঁজখবর কখনো নেওয়া হয় না। তারা বলেন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো একটা ভালো কোম্পানি, কিন্তু এখানে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের জন্যই আজ আমাদের এই অবস্থা। আমাদের চাকরি স্থায়িত্ব না বলে কর্মকর্তা তাদের ইচ্ছামত আমাদের চাকরি থেকে বের করে দেয়। তারা এই বৈষম্য থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। এসময় তারা আরও বলেন, আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, দীর্ঘ ১৩ বছরের আইনি লড়াই শেষে যখন আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি ঠিক তখনই ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন এর নেতৃবৃন্দ ও কোম্পানির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারদের যোগসাজশে পূর্বের ন্যায় এবারও শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। তারা বলেন আজকের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে যদি তাদের দাবি না মানা হয়, তাহলে এর পরে শ্রমিকরা তাদের পরিবারের সদস্য নিয়ে এই ফ্যাক্টরির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেয়।