বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৫০ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়ায় ভন্ড কবিরাজ জাহিদের ঝাড়-ফুঁকের অন্তরালে অনৈতিক কাজের অভিযোগ

Reporter Name / ১২৯ Time View
Update : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥
ডাক্তারী পেশাকেও হার মানিয়ে দিতে যাচ্ছেন ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ কবজের মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের স্বস্তিপুর মধ্যপাড়ার মৃত কাজেম আলীর অল্প বয়সী পুত্র ভন্ড ও ভূয়া কবিরাজ জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে। বেরিয়ে এসছে তার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর একাধিক তথ্য। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ব্যক্তির সুখের সংসার ভাঙার অভিযোগ। এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা বলেন, জাহিদ উক্ত এলাকায় তার নিজ বাড়ীতেই দীর্ঘ ৫ বছর ধরে কবিরাজ সেজে মহিলাদের সর্ব রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ কবজের মাধ্যমে। তারা এটাও বলেন, এই ভূয়া কবিরাজ জাহিদ ঝাঁড় ফুঁকের অন্তরালে রোগীদের সাথে ধীরে-ধীরে গোপন সম্পর্ক তৈরী করেন। পরবর্তীতে সেটি রূপ নেয় দৈহিক সম্পর্কে। ইতিপূর্বে তিনি স্বস্তিপুর গ্রামের সুলতানের সংসার ভেঙেছিল। তারা এটাও বলেন, গত দু’বছর আগে উক্ত এলাকার খবিরের বউয়ের সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় জনগণের হাতে ধরা পড়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক বিচারে তাকে বড় ধরনের অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন এলাকাবাসী। মূূলত: এই ভন্ড ও ভূয়া প্রতারক জাহিদের রয়েছে একাধিক সোর্স তারা আশ পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগী পাঠান তার কাছে বিনিময়ে তারা একটি কমিশন পান। এই ভন্ড কবিরাজের একটি ফেইস বুক পেজ আছে উক্ত পেজে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে লাইভে যুক্ত হয়ে অশালিন কথা বার্তার মাধ্যমে আড্ডা চলে ঘন্টার পর ঘন্টা।
উক্ত এলাকার ব্যক্তিরা আরো বলেন, এলাকার প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে এমন প্রতারণা করে চলেছে। সূর্য উদীত হবার আগের থেকে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীদের সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কবিরাজী চিকিৎসা। ঝাড় ফুঁক আর গাছান্ত ওষুধেই চলছে সকল রোগের চিকিৎসা। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অন্তত প্রায় শতাধিক রোগী সেখানে এসে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তবে এই প্রতারণার বিষয়ে কোনো রোগী কিংবা তার স্বজনরা মুখ খুলতে চাননা। এই পন্থায় প্রতারণার মাধ্যমে কবিরাজসহ এলাকার অনেকেই হয়েছেন লাখপতি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একেকজন রোগীকে দিচ্ছেন একেক রকম চিকিৎসা। কাউকে দিচ্ছেন এলোপেথিক, কাউকে পানিপরা, কাউকে দোয়া লিখে আবার কাউকে সাদা কাগজে আরবীতে দোয়া লিখে তাবিজ বানিয়ে। আর এই ধরনের সেবা দিয়ে ৫শ থেকে হাজার কিংবা তার অধিক টাকা হাদিয়া নিচ্ছেন। ভুক্তভোগীরাও তার কথা আর আধ্যাত্বিক আচরণে কোনো আপত্তি ছাড়াই চাহিদা মাফিক টাকা দিয়ে আসছেন। দীর্ঘ ৫ বছর এমন প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক বছর আগেই হয়েছেন লাখপতি। স্বস্তিপুর গ্রামের এক স্কুল শিক্ষক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কবিরাজ জাহিদ এভাবে অপচিকিৎসা দিচ্ছেন। তার খপ্পরে পড়ে নিরীহ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। রোগতো ভাল হচ্ছেই না বরং তারা টাকা পয়সা নষ্ট করছেন। এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একাধিক ব্যক্তি জানান, ভন্ড কবিরাজ জাহিদের রয়েছে আলুর দোষ সে ঝাড়-ফুঁকের নামে চলে তার অনৈতিক ব্যবসা যা ইতিপূর্বে হাতে ধরা পড়েছে, কিন্ত অন্তরালে চলে কিন্তু ওগুলো সবার নজওে আসছে না। আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা চাই।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন আকুল উদ্দিন বলেন, গ্রামাঞ্চলে এসব কুসংস্কার এখনো আছে বলে শোনা যায়। এ ধরনের অপচিকিৎসার কোনো ভিত্তি নেই। এটা সম্পন্ন কুসংস্কার এবং প্রতারণা। রোগব্যাধি ভালো হবার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। যেকোন রোগই হোক সেজন্য হাসপাতাল রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঝাড়-ফুঁকে তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হলেও রোগী মানষিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন। তবে এসব কবিরাজের কাছ থেকে ওষুধ জাতীয় কিছু সেবন করলে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। এদের কাছ থেকে বিরত থাকাই ভালো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page