কে এম শাহীন রেজা,
কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি হানিফ ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতার মদদপষ্ট কুষ্টিয়া গণপূর্তের সহ-প্রকৌশলী অনুপ কুমার সাহা আওয়ামীলীগের শাসন আমলে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছে। তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এই অফিসে হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। কতখানি ক্ষমতার দাপট থাকলে ১৭ বছর একই অফিসে চাকরী করতে পারেন। তিনি কুষ্টিয়া পৌর ৯ নং ওয়ার্ডের দত্তপাড়া এলাকার মৃত অসিত সাহার ছেলে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা থাকায় সহজে মিলে গেছে গণপূর্তর চাকরি। চাকরী পাওয়ার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিং এ তার উপস্থিত ছিলো নিয়মিত। সাবেক এমপি হানিফ এবং সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতার সাথে তোলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি এখন পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত। যে কারণে তার বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য সহ নানান অভিযোগ থাকলেও মুখ খুলতে সাহস পেতেন না কুষ্টিয়া গণপূর্ত অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অফিসেও তারা চলাফেরা ছিলো সিনেমার ডনের মত। কুষ্টিয়া থেকে মাগুরাতে পোস্টিং হলেও তিন মাসের ব্যবধানে পুনরায় কুষ্টিয়াতে পোস্টিং নিয়ে চলে আসেন। এই কর্মকর্তা সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে এবং তার পূর্ব পুরুষেদের বসবাস ছিলো মাটির ঘরে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার ভাগ্যেও চাঁকা ঘুরেও যায়।
তার ভাগ্য পরিবর্তনের মূলে ছিলো আওয়ামী লীগের বড়-বড় নেতা এবং গণপূর্তের অধীনন্থ ঠিকাদারদের সাথে সক্ষতা। প্রাপ্ত তথ্য মতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুষ্টিয়া পৌরসভার আড়ুয়াপাড়ার দত্ত পাড়া গলিতে তার রয়েছে অধুনা নামের একটি ৪ তলা বিশিষ্ট বাড়ি, ইসকন মন্দিরের পাশে ৪ কাঠা জমি, কুষ্টিয়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় তার রয়েছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একাধিক ফ্লাট, একটি ২৮ লক্ষ টাকার প্রাইভেট গাড়ি এবং ৩টা দশ চাকার ট্রাক।
অন্যদিকে গাজীপুরে তার শ^শুরবাড়ী এলকাতেও তার নামে অথবা বে-নামে রয়েছে অঢেল সম্পত্তি। যা নিয়ে তার এলকার বাসিন্দাদের মধ্যে রীতিমত জল্পনা কল্পনা চলছে। তবে এলকাবাসীর ধারণা তার দৃশ্যমান সম্পদের চেয়েও কয়েকগুণ বেশী রয়েছে গোপনে ক্রয়কৃত সম্পদ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার এক প্রতিবেশী জানান, আনুপ কুমার সাহাকে আমি ছোট বেলা থেকেই চিনি। তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অগ্রণী ব্যাংকের একাউন্ট্যান্ট হিসেবে চাকরি করতেন। মুক্তিযোদ্ধার কোটায় অনুপের চাকরি হয়। আমি জানি সে গণপূর্ত অফিসে সহ-প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বে আছেন। তাদের এক সময় মাটির ঘরে বসবাস ছিলো। সরকারী চাকরির সাথে সাথে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তার সক্ষতা থাকার কারণে আজ তিনি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। এলাকার মধ্যে আমার জানামতে চারতালা একটি বাড়ি আরো দুইটি জায়গা আছে। আড়ুয়া পাড়া ইসকন মন্দিরের পাশে চার কাঠা জায়গা কিনেছে এবং তার শ্বশুরের বাড়ি ঢাকা এলাকায় গাজীপুর সদর উপজেলার সামনেও জায়গা কেনা আছে। অনুপের বাবা ১৯৯৮ সালের দিকে ব্যাংকের চাকরি থাকাকালীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। অনুপ কুমার সাহা পরিবারের মধ্যে মেজো ছেলে ছিলেন।
অপর অরেক প্রতিবেশী জানান, একজন গণপূর্তের সহ-প্রকৌশলী বৈধভাবে এত টাকা এবং সম্পদের মালিক হতে পারে না। অবশ্যই সে অবৈধ আয়ের টাকা দিয়ে সম্পদের সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তার টাকা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দুদক বা সরকারের অনান্য সংস্থা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই। তবে এখন যদি দুদক তার সম্পদের অনুসন্ধান করে তাহলে তার সম্পদের উৎস বের হয়ে আসবে।
এ বিষয়ে গণপূর্ত অধীদপ্তরের সহ-প্রকৌশলী অনুপ কুমার সাহার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেন নাই। এদিকে গণপূর্ত অধীদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন জহির মুঠোফোনে জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি তার বিষয়ে এতকিছু আমার জানা নেই।
thedailyajkerhaowa.com
একটি অনলাইন নিউজ সংরক্ষন প্রতিষ্ঠান
সম্পাদক: সুজন মাহমুদ , প্রকাশকঃ নুরুন্নাহার হিরা , বার্তা সম্পাদকঃ শুভ শেখ, মোবাঃ01721-111321
Copyright © 2025 Ajker Haowa. All rights reserved.You cannot copy content of this page