বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার গাছিরা

Reporter Name / ১৪৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

কে এম শাহীন রেজাঃ

কুষ্টিয়ার শহরের পাশেই জগতি ফুলবাড়ী মাঠপাড়া এলাকায় পারভেজ ও তার তিনজন কর্মচারী খেজুরের রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। উক্ত এলাকার মসজিদের নিয়ন্ত্রনে বেশ কয়েক বছর ধরেই খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় এই বছরেও আগাম খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন তিনি। প্রতিদিন ৮০টি খেজুর গাছ কাটেন। গড়ে প্রতিদিন ২০ হাড়ি রস হয়। প্রতি হাড়ি রসের মূল্য ৪০০/৫০০ টাকা। উক্ত এলাকায় রয়েছে ৬শতটির অধিক খেজুর গাছ। প্রতি শীত মৌসুমে লিজ বাবদ এলাকার মসজিদ কমিটিকে দিতে হয় ১,৩০,০০০ টাকা। লিটন, ফরহাদ ও নুর ইসলাম নামে তিনজন কর্মচারী রয়েছে, যাদের প্রত্যেকের মাসিক বেতন ১৫০০০/১৬০০০ টাকা। কর্মচারীরা জানান, বাংলা কার্তিক মাসের ১৫ তারিখ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ পুরোদমে শুরু হয়। শীতকালীন পুরো সময়টাই খেজুরের রস, গুড় ও খেজুরের পাটালি প্রস্তুত করতে সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকতে হয়। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় টাটকা খেজুরের রস পাওয়া যায় এখানে। খেঁজুরের রস দ্বারা ফিন্নি ও পায়েস তৈরি করা হয়, এছাড়াও খেজুরের রস দ্বারা ও খেজুরের গুড় দ্বারা বিভিন্ন শীতকালীন পিঠা তৈরি করা হয় যে জন্য সকাল-সন্ধ্যায় অরজিনাল খেজুরের রস সংগ্রহ করতে প্রতিদিন শত শত লোক এখানে ভিড় জমায়। রাস্তার দুই ধারে সারি সারি খেজুর গাছ এই গাছ হতে রস সংগ্রহ চলছে। খেঁজুরের রস শরীর আর মনও চনমনে রাখে। খেজুরের রসে থাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, ফলে রক্তস্বল্পতা দূর করতেও ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। তবে অ্যানিমিয়ার সমস্যা থাকলে প্রতিদিন এক টুকরো পাটালি গুড় বা ঝোলা গুড় খেলে খুব ভাল কাজ হয়। খেজুরের রস শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। শীতকালের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে কাঁচা খেজুরের রস খেতে পছন্দ করেন অনেকে। কেউ আবার এ রসকে প্রক্রিয়াজাত করে পিঠা-পুলি, পায়েস, গুড় তৈরি করে খেয়ে থাকেন। সারা বছর খেজুরের রস সংগ্রহ করা যায়। তবে শীতকালের খেঁজুরের রসই বেশি সুস্বাদু। উল্লেখ্য শীত কমার সঙ্গে সঙ্গে রসের পরিমাণ ও মানও কমতে থাকে। খেজুরের রস প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। বাংলাদেশে যে খেঁজুর হয় তাতে যথেষ্ট শাঁস থাকে না বলে অনেকেই এটা খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না। তাই খেজুরের রসই আসল আকর্ষণ। খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড় অনিদ্রা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুরের গুড়ে আয়রন বা লৌহ বেশি থাকে এবং হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনতে খেজুরের রস দারুণ উপকারী। একজন সুস্থ মানুষ সকালে এক থেকে দুই গ্লাস রস খেতে পারেন। সকালে খালি পেটে খেলেও সমস্যা নেই। যেহেতু এটি এনার্জি ড্রিংক, তাই শরীরে শক্তি জোগাতে পরিমাণমতো রস খাওয়া ভালো। গত সোমবার সরেজমিনে সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায় সন্ধ্যাকালীন রস খেতে কুষ্টিয়া শহর ও আশ পাশের উপজেলা থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে সমাগম হয়েছে। তারা রস খাচ্ছে এবং ক্রয় করে বাড়ী নিয়ে যাচ্ছেন এভাবে বিক্রি চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। তবে সকালের বেশীর ভাগ রস দিয়ে উক্ত স্থানেই গুড় ও পাটালি তৈরী করছেন গাছীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page