কে এম শাহীন রেজা ॥
স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন ৬ আগষ্ট বিজয় মিছিল করে বাড়ি ফেরার পথে আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনীর হাতে গুরুত্বর হামলার শিকার হন সেকোম আলী নামের জনৈক এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ৪ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পর ১২ আগষ্ট অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভাদালিয়ার ত্রাস খ্যাত মামুন অর রশিদ ওরফে টাইগার মামুনকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন। গত ১৪ই আগষ্ট কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
নিহতের স্ত্রীর দায়ের করা এজাহারের বরাত দিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ০৬ আগষ্ট সকাল সাড়ে ৮ টার সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভাদালিয়া দরবেশপুর গ্রামস্থ জনৈক শহিদের বাড়ির সামনে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সেকোমের উপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে টাইগার মামুন ও তার পেটুয়া বাহিনীর সদস্যরা। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- ১. মামুন অর রশিদ ওরফে টাইগার মামুন (৩৩) ২. এনামূল (২৭), উভয় পিতা- আলী রেজা, ৩. শাহীন (৩০), পিতা- মুনতাজ আলী, ৪. মেহেদী হাসান (২৬), পিতা- মৃত হযরত আলী, ৫. হোসেন আলী (৪০), পিতা- মিনাজ উদ্দিন, ৬. সাবান (৪৫), পিতা- তাজু বিশ্বাস, ৭. পান্না (২৫), পিতা- আনোয়ার, (৮) আনোয়ার (৩৫), পিতা- আজিজ প্রধান, ৯. রেজা (৩৪), পিতা- মৃত জয়নুদ্দিন ব্যাপারী, সর্ব সাং- দরবেশপুর পূর্বপাড়া, ১০. নূরুল ইসলাম মুক্ত (৫৫), পিতা- আতিয়ার রহমান, ১১. আব্বাস উদ্দিন ওরফে লাদেন (৫২), পিতা- মৃত তাজের আলী মন্ডল, উভয় সাং- কাথুলিয়া, ১২. রাসেল (৩২), পিতা- মোঃ সেকেন আলী, সাং- দহকুলা বাগানপাড়া, ১৩. আব্দুল জলিল (৫০), পিতা- মৃত কেরামত আলী, সাং- দওয়াপাড়া (সোনাপুর), সর্ব থানা ও জেলা- কুষ্টিয়া।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দরবেশপুর গ্রামের জনৈক শহীদের বাড়ির সামনে পৌঁছালে আসামি টাইগার মামুন তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে সেকোমের মাথার বাম পাশে ও মাথার পিছনে কোপ মেয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। এরপর উপরে উল্লেখিত অনান্য আসামীগন তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেকোমের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনার সময় সেকোমের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পর ১২ আগষ্ট সেকোমের অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে পুনরায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এলাকাবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের আমলে টাইগার মামুনের ত্রাসের রাজত্ব গড়ে ওঠে। এসময়কালে লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, তদবির বাণিজ্য করে টাইগার মামুন কোটিপতি বনে যান। গড়ে তোলেন পেটুয়া বাহিনী। সবশেষ গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর এই বাহিনীর সদস্যরা এলাকার লুটপাট ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে।
thedailyajkerhaowa.com
একটি অনলাইন নিউজ সংরক্ষন প্রতিষ্ঠান
সম্পাদক: সুজন মাহমুদ , প্রকাশকঃ নুরুন্নাহার হিরা , বার্তা সম্পাদকঃ শুভ শেখ, মোবাঃ01721-111321
Copyright © 2025 Ajker Haowa. All rights reserved.You cannot copy content of this page