নদী ও নারী

লেখকঃএম কে সাগর
পায়ে হাটা পথ ধরে ধীর গতিতে এগিয়ে
একাকি উপনিত হলাম পদ্মার তীরে
বিনয়ী উচ্চারণে আর শীর উঁচিয়ে
মা গঙ্গাকে আহবান করলাম আপন মনে,
মহাভারতের পরিক্রমায় তুমিই তো পদ্মা
বঙ্গভূমিতে পদার্পণে পরিচয়ে আনলে ভিন্নতা
“প্রকট হও মাতা গঙ্গা”
তব সন্তানের আর্তিতে পাও প্রসন্নতা।
অনন্তের উচ্চারণে তুমি স্রোতের পর স্রোতে
বিপুলা ক্রোধান্বিত তুমি আমাকেই সুধালে,
জননী-জায়া ও ভগ্নীর প্রতি শ্রদ্ধাবনত
বাঙালি জাতি-চরিত্র বিন্দুমাত্র আছে অবশিষ্টাংশ?
কেন নিয়ত ধর্ষিত হচ্ছে নদী ও নারী?
নদীকে ভালবেসে মাতৃত্বের আসনে বসিয়ে,
এই জনপদেই তো প্রণমী জানানো হয়েছে,
নদীই নারী আর নারীই যে নদীর সমার্থক
আর তারা উভয়ে মাতৃরুপি নই কী?
তবে বাঙালি তার সংস্কৃতি ভুলে আজ,
কেন বিজাতীয় আবেশে মাতৃত্বের অবমাননায় আসীন?
ঘর থেকে রাস্তা হয়ে শিক্ষাঙ্গন
কোথাও কি নারীর জন্য সামান্য নিরাপদ???
পদ্মা-যমুনা-বুড়িগঙ্গা কেউ কি
উৎপাত মুক্ত তার আপন তটে?
পদ্মা-মেঘনা-যমুনারা তবে আজ কেন সর্বত্র লাঞ্ছিত?
বাঙালির অহম আর লালসার বলিকাষ্ঠে
এমন জবাব আছে কী, যেটাতে কাটবে হৃদয়ের ভার?
সন্তানরুপী কবি, হাটুমুড়ে নদীতটে,
অশ্রুসিক্ত লোচনে চেয়ে অনন্ত পটে,
লয়ে হৃদভার,
খুলি আত্মার দ্বার,
জননীর প্রতি হায়
জবাব হীন অসহায়
গ্লানিবোধটুকু হজম করিতে চায়,
অবশেষে বোঝে নিজেতেই নাই ঠায়।
১৪ই জানুয়ারী
পদ্মা নদীর তীর
খোকসা, কুষ্টিয়া।