দৌলতপুরের ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি

মোঃ সেলিম রেজা রনি দৌলতপুর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
দৌলতপুরের ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দু’টি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তলিয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ডুবেছে মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়ন এলাকার চরের ফসল ও আবাদি জমি। এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে কমতে শুরু করে। তবে, ফের পানি বাড়তে শুরু করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে। এ বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই দিনে নদীতে পানি বেড়েছে ২৩ সেন্টিমিটার। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ভাগজোত এলাকার কৃষক বকুল হোসেন জানান, বন্যার পানিতে তার ১০ বিঘা জমির মাসকলাই ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফিলিপনগর গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম জানান, পদ্মার পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের প্রায় ১৫বিঘা জমির মাষকলাই পানিতে তলিয়ে গেছে। রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে। তাঁদের ইউনিয়নের পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাষকালাই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদিকে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৮টি গ্রামের আশপাশে পানি চলে এসেছে। চলাচলের রাস্তার ওপরে ও কিছু বাড়িতে পানি উঠে গেছে। তবে, এখনো বসতঘরে পানি প্রবেশ করেনি,তবে এভাবে পানি বাড়তে থাকলে দু-একদিনের মধ্যে বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়বে ও চরের আবাদি জমি সব ডুবে গেছে। চরে পানিবন্দী হয়ে পড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো স্বাভাবিক আছে বলে জানান। এবার পদ্মার চরে প্লাবিত হওয়া কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। এ বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে, এখন পর্যন্ত চার ইউনিয়নের অন্তত ১১০ হেক্টর জমির মাসকালাই ডুবে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকালাই চাষ হয়েছে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়া এলাকাগুলোর সব সময় খোঁজ রাখছি।