বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১১ অপরাহ্ন

কুষ্টিয়া লালন–ভক্তের ঘর ভাঙার প্রতিবাদে মানববন্ধন স্বামীর মাজারেই থাকতে চান চায়না বেগম

Reporter Name / ২২৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪

 

কে এম শাহীন রেজা ॥
আমাকে যদি স্বামীর কবর থেকে সাপে খায়, বাঘে খায়, তবুও আমি ওই জায়গায় থাকব। মাটির সঙ্গে মিশে যাব। আমাকে কবর দিতে কাউকে আসা লাগবে না, ওই খানেই আমার ঘর করে দেওয়া লাগবে। আমার যেমন ঘর ছিল, তেমন ঘরই করে দেওয়া লাগবে। আমি অন্য কোনোখানে থাকব না। তবু কোথাও যাব না। গত ২ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেউরিয়ায় লালন আখড়ার সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন লালন–ভক্ত চায়না বেগম।
মানববন্ধনে ওই বৃদ্ধা বলেন, অন্যের জমি ও কিছুটা সরকারি জায়গায় আমাকে ঘর করে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু কয়দিন পর ওই জায়গা থেকেও আমাকে লাথি দিয়ে বিদায় করে দেবে। আমি আমার স্বামীর মাজারে যেতে পারব না, সাধুসঙ্গ করতে পারব না। আমি সেই জন্যই ওই সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না। আমার জায়গায়ই আমি থাকব। প্রায় এক ঘণ্টা মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে চায়না বেগম আরও বলেন, সকাল হলে আমি ভিক্ষা করতে যাব। সারা দিন বেড়াব। দিন শেষে স্বামীর ভিটায় রাঁধে (রান্না) খাব। তবু স্বামীর ভিটা ছেড়ে কোথাও যাব না। আমার ঘর যেভাবে ছিল। আপনারা সেভাবেই করে দেন। লালন–ভক্ত চায়না বেগম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা এলাকার মৃত গাজির উদ্দিনের স্ত্রী। গত ২৬ জুন সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাতব্বররা তাঁর ঘর ভাঙচুর করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

লালন–ভক্তের ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফকির আলেক সাঁই। তিনি বলেন, দাঁড়ি রাখলে আর টুপি পরলেই মুসলমান হওয়া যায় না, মানুষ হওয়া যায় না। মানুষ হতে হলে আগে মনুষ্যত্বের অধিকারী হতে হবে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।

গত ২৬ জুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে চায়না বেগমের ঘর ভেঙে তাকে উচ্ছেদ করেন ওই এলাকার একটি গোষ্ঠী। এ বিষয়ে চায়না বেগম থানায় অভিযোগ জানালে উভয়পক্ষকে নিয়ে মিটিং শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে অন্য জায়গা ঘর করে দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি চায়না বেগম। পরে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দেন চায়না বেগম ও তার সঙ্গীরা। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, চায়না বেগমের ভিটেমাটিতে বাড়ি করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক হিসেবে আমার যতটুকু সহায়তা করার ক্ষমতা রয়েছে, আমি ততটুকু সহায়তা প্রদান করব। চায়না বেগমকে হুমকি প্রদানের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page